3 November 2019

Dengue Fever /Bangla

ডেঙ্গুর জন্য কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন

ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এই জ্বর সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। তাই উপসর্গ অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসা যথেষ্ট। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। যেমন:

* শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত হলে
* প্লাটিলেটের মাত্রা কমে গেলে
* শ্বাসকষ্ট হলে বা পেট ফুলে পানি এলে
* প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে
* জন্ডিস দেখা দিলে
* অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিলে
* প্রচণ্ড পেটে ব্যথা বা বমি হলে।

চিকিৎসা
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী সাধারণত ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। এমনকি কোনো চিকিৎসা না করালেও। তবে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই চলতে হবে। যাতে ডেঙ্গুজনিত কোনো মারাত্মক জটিলতা না হয়। ডেঙ্গু জ্বরটা আসলে গোলমেলে রোগ, সাধারণত লক্ষণ বুঝেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।
* সম্পূর্ণ ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রামে থাকতে হবে।
* যথেষ্ট পরিমাণে পানি, শরবত, ডাবের পানি ও অন্যান্য তরল-জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।
* খেতে না পারলে দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে।
* জ্বর কমানোর জন্য শুধু প্যারাসিটামল-জাতীয় ব্যথার ওষুধই যথেষ্ট। এসপিরিন বা ডাইক্লোফেনাক-জাতীয় ব্যথার ওষুধ কোনোক্রমেই খাওয়া যাবে না। এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে।
* জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে হবে।

প্রতিরোধ
ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের মূল মন্ত্রই হলো এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে তার ব্যবস্থা করা। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এরা ডিম পাড়ে। ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দসই নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থানগুলোকে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং একই সঙ্গে মশা নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
* বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
* যেহেতু এডিস মশা মূলত এমন বস্তুর মধ্যে ডিম পাড়ে, যেখানে স্বচ্ছ পানি জমে থাকে। তাই ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, ডাবের খোলা, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে।
* ঘরের বাথরুমে বা কোথাও জমানো পানি পাঁচ দিনের বেশি যেন না থাকে। অ্যাকুয়ারিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ারকন্ডিশনারের নিচেও যেন পানি জমে না থাকে।
* এডিস মশা সাধারণত সকালে ও সন্ধ্যায় কামড়ায়। তবে অন্য কোনো সময়ও কামড়াতে পারে। তাই দিনের বেলা শরীরে ভালোভাবে কাপড় দিয়ে ঢেকে বের হতে হবে, প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের দরজা-জানালায় নেট লাগাতে হবে।
* দিনের বেলায় মশারি টানিয়ে অথবা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে হবে।
* বাচ্চাদের যারা স্কুলে যায়, তাদের হাফ প্যান্ট না পরিয়ে ফুল প্যান্ট পরিয়ে স্কুলে পাঠাতে হবে।
* মশা নিধনের স্প্রে, কয়েল, ম্যাট ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে।
* ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই সব সময় মশারির মধ্যে রাখতে হবে, যাতে করে কোনো মশা কামড়াতে না পারে।
* ডেঙ্গু জ্বরের মশাটি এ দেশে আগেও ছিল, এখনো আছে। মশা প্রজননের ও বংশবৃদ্ধির পরিবেশও আছে। তাই একমাত্র সচেতনতা ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।

No comments:

Post a Comment

https://www.facebook.com/102033251244465/posts/276859113761877/ https://www.facebook.com/102033251244465/posts/276859113761877/